সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ অপরাহ্ন

News Headline :
পাবনা প্রেসক্লাবের অনিয়ম তদন্তে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কমিটি গঠন মহানগরীতে স্বর্ণের দোকানে চুরির অভিযোগে জনতার হাতে আটক নারীকে পুলিশে সোপর্দ পাঁচ শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বরণ করলো হাবিপ্রবি ছাত্রশিবির মানুষকে যারা কষ্ট দেয় তাদেরকে পরিহার করুন : এ.কে.এম. আমিনুল হক যুবদল নেতা বাঁধনের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগরীতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পিংকু-সহ গ্রেফতার ৮ জুড়ীতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে আটক ৮ পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ কর্মী মানিক হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি গ্রেফতার গোবিন্দগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ২৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রংপুর বিএনপি ও আহবায়ক সামুর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে অপপ্রচারের অভিযোগ মামলার বাদির

শেরপুরে মরদেহ চুরি ঠেকাতে কবরে দেয়া হচ্ছে লোহার গ্রিল

Reading Time: 2 minutes

শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর :
শেরপুর সদর উপজেলায় কবর থেকে মরদেহ চুরির ঘটনা বেড়েছে। চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন কবরস্থান পাকা করাসহ দেয়া হচ্ছে লোহার গ্রিল। এলাকাবাসী বলেন, স্বজনদের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু রাখতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা। এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে চোরচক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স¤প্রতি শেরপুর সদরের কামারিয়া ইউনিয়নের সূর্যদী পশ্চিমপাড়া গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় সরকারি কবরস্থান না থাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় স্বজনদের মরদেহ। আর পাহারার ব্যবস্থা না থাকায় একের পর এক পুরোনো বেশির ভাগ কবর থেকেই চুরি হয়েছে মরদেহ। তাই চুরি ঠেকাতে বেশির ভাগ কবরের ওপরে দেয়া রয়েছে লোহার গ্রিল। মৃত স্বজনদের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু রাখতেই বাড়তি খরচ করে অভিনবভাবে গ্রিল দিচ্ছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, ইসলামি রেওয়াজ অনুযায়ী মৃত্যুর পর মরদেহ দাফন হয় কবরস্থানে। কিন্তু দাফনের কিছুদিন পর শেরপুরের বিভিন্ন এলাকার কবরস্থান থেকে চুরি হচ্ছে সব মরদেহ । ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক কবরে লোহার গ্রিল স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে গত দুই বছরে ওই ইউনিয়ন থেকে শতাধিক মরদেহ চুরি হয়েছে। স্থানীয়রা আরও জানান, একটি কবর গ্রিল স্থাপনের জন্য খরচ হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলে বাড়তি টাকা দিয়ে এসব করতে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন।
সূর্যদী পশ্চিমপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আকবর আলীর কবর রয়েছে গ্রিল করা। এ বিষয়ে তার ছেলে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার চাচি, দাদি, দাদা ও জেঠার মরদেহ কবর থেকে অনেক আগে চুরি হয়েছে। এছাড়া এলাকার অনেকের মরদেহ চুরি হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, কিছুদিন আগে এ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে হাসমত আলীর মায়ের মরদেহ চুরি হয়েছে। ফজরের নামাজের পর আমরা কয়েকজন হাঁটার সময় কবর খোঁড়া দেখতে পাই। পরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পাই যে কবরে মরদেহ নেই। আমার মনে হয়, রাতের আঁধারের কোনো একসময় চোরেরা কবর খুঁড়ে মরদেহ চুরি করে নিয়ে যায়।
সূর্যদী পশ্চিমপাড়া এলাকার মনির মিয়া বলেন, আমরা কবর পাকা করি এবং কবরের ভেতরে মাটির ওপরের অংশ গ্রিল করে আটকে রাখি। সহজেই যেন চোর মরদেহ উত্তোলন করতে না পারে। সূর্যদী পশ্চিমপাড়া গ্রামের কয়েকজন রাজমিস্ত্রি জানান, একটা কবর পাকা করতে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর গ্রিল করতে আরও খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে একটা কবরের খরচ পড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা এভাবে গ্রিল দিয়ে কবর দিতে পারলেও সবাই পারে না।’ মানবাধিকার সংস্থা ও এনজিও সৃষ্টি ইউম্যান রাইটস সোসাইটির শেরপুর জেলার সভাপতি আলমগীর আল-আমিন বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকা কবর থেকে মরদেহ চুরি হচ্ছে। আবার সামাজিক কবরস্থান থেকেও একাধিক মরদেহ এক রাতেই চুরির ঘটনা ঘটেছে। যদিও ইতোমধ্যে পুলিশ চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করেছে। আমরা আশা করব, মুসলমানদের শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরস্থানে থাকা মরদেহটি রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি সামাজিক কবরস্থানগুলোতে নিজস্ব সমাজের উদ্যোগে পাহারা ও আলোর ব্যবস্থা করলে আমার মনে হয়, অনেকটাই চুরির ঘটনা কমে আসবে। শেরপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল্লাহ বলেন, গেল বছরের সেপ্টেম্বরে দুটি পৃথক মামলা হয়। এরপর জেলা পুলিশের তৎপরতায় দুই কেমিক্যাল ব্যবসায়ীসহ চার চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় স্ক্রু ড্রাইভার, প্লাস, ব্যাগ। পরে গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদানের পর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এরপর থেকেই চুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনো কিছু কিছু জায়গায় কবরের ওপরে গ্রিল দেয়া দেখা যায়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com