শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
রফিকুল ইসলাম, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা। সামাজিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত স্বার্থপরতা, উচ্চবিলাসিতা, বনিবনা না হওয়া, পরকীয়া, ভুল বুঝাবুঝি, মতানৈক্যসহ নানা কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে দাম্পত্য সম্পর্ক। পরিসমাপ্তি ঘটছে দাম্পত্য জীবনের পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয়। বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে নারী পুরুষের তেমন সমস্যা না হলেও অনাদর ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন সন্তান- সন্তোতিরা। হোসেনপুর উপজেলার মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারদের দেওয়া এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, নারীদের তরফ থেকেই দেওয়া হচ্ছে অধিকাংশ তালাকের নোটিশ, যাদের বয়স বিশ থেকে ত্রিশের এর কোটায়।
জানাযায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ গত এক বছরে উপজেলার সাহেদল, পুমদী গোবিন্দপুর, সিদলা, জিনারী, আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন সহ পৌরসভায় তিন শতাধিক বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে । পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ে পক্ষের বেশী তালাক হয়েছে। সাহেদল ইউনিয়ন নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার আকরাম হোসেন বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিগত টাচ মোবাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ইউটিউব এ অশ্লিলতা দেখে অধিকাংশ নারী-পুরুষ পরকিয়ায় শিকার হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছেন। বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে স্বামী-স্ত্রী পৃথক থাকছেন। এতে বাড়ছে মানসিক সংকট। ফলে সন্তানরা অনাদর, অবহেলার শিকারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের শৈশব এমনকি ভবিষ্যৎ। এতে পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে সমাজে।
হোসেনপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মবিন বলেন অধিকাংশ বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ পরকীয়া সম্পর্ক। এছাড়া পরিবারে বনিবনার অভাব, স্বামীর দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা, স্ত্রীর বিলাসবহুল চাহিদা মেটাতে না পাড়া, সামাজিক অবক্ষয়সহ নানা কারণে ঘটছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা। হোসেনপুর পৌরএলাকার বাসিন্দা স্ত্রীর কর্তৃক তালাকের শিকার হয়েছেন মশিউর রহমান। তিনি জানান, তার স্ত্রী ফেসবুক আসক্ত। স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় সে ছেড়ে চলে যায় এবং এক মাস পরে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়। তালাকের ঘটনা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা হাসপাতাল মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা মোকসুদ বলেন, ইসলামিক বিষয়ে অজ্ঞতা, পরকীয়া, একে অপরের সাথে ভুলবুঝা বুঝি এবং ইসলামি বিধি নিষেধ না মানার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ বেশী ঘটছে। এতে করে সামাজিক অবক্ষয়ের পাশাপাশি মানুষের মাঝে মানষিক চাপ বাড়ছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কমকর্তা ও চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক কোন পদক্ষেপ গ্রহন করবেন কি না তা হোসেনপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী নাহিদ ইভার নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে প্রশাসন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের গনসচেতনতা মুলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে এর জরুরী প্রতিকার দাবী করেন এলাকার সুধী মহল।