বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 3 minutes
শম্পা দাস ও সমরেশ রায়, কলকাতা :
আজ পয়লা জুলাই, শনিবার, ডক্টর বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে এবং ডক্টর দিবস কে কেন্দ্র করে, একটি সাংবাদিক সম্মেলন করলেন মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল, দুপুর ১২ টা থেকে। মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল একটি ১৬ বছর বয়সী যুবকের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করে প্রাণ বাঁচালো এবং চিকিৎসা জগতের মাইলফলক তৈরি করল,। পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি হসপিটাল চেইন অসাধারণ ,কৃতিত্বের অধিকারী হল বাংলা তথা পূর্ব ভারতের প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপন করে বিস্ময় সৃষ্টি করে ফেললেন।
১৬ বছর বয়সী সপনীল বিশ্বাস যে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন দুর্ভাগ্যবশত প্যারাকোয়াট খেয়ে ফেলার জন্য, এই প্যারাকোয়াট খুবই বিষাক্ত, এর কারণে মৃত্যুর হার খুব বেশি, চিকিৎসা নাই বললেই চলে। জানান মেডিকা হসপিটালের চিকিৎসকরা। ২৪ শে জুন এই ১৬ বছর ছেলেটির অস্ত্র প্রচার করা হয় মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটালে ডক্টর কুনাল সরকার, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং মেডিকা ইনস্টিউট অফ কার্ডিয়াক সাইন্স এর কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট, ডক্টর দীপাঞ্জন চ্যাটার্জী ডিরেক্টর ইকমো এবং থোরাসিক অর্গান ট্রান্সপ্লা্ন্ট প্রোগ্রাম ফিজিশিয়ান মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটালের কার্ডিয়াও পালমোনারি কেয়ার স্পেশালিস্ট, এছাড়াও ডাক্তারদের সাথে যে সকল ডাক্তাররা দিনভর রাত জেগে সহযোগিতা করেছেন এবং ছেলেটিকে সুস্থ করে তুলেছেন আপ্রাণ প্রচেষ্টায় , তারা হলেন ডক্টর সৌমজিত ঘোষ ,ডক্টর সপ্তর্ষী রায় ,ডঃ এম বি দা, ডক্টর তনগনিকা কোলে ,ডঃ হীরক মজুমদার ,ডক্টর ঋতুপর্ণা দাস, ডক্টর শৈবাল ত্রিপাঠী এবং মিস্টার দেবলাল পন্ডিত , পুরো রাত ধরে অস্ত্রোপচার এ সহযোগিতা করেছেন, ২৫ শে জুন অস্ত্রোপচার হয়। ১৬ বছর বয়সী স্বপ্নীল বাড়ি বারাসত, ২৭ এপ্রিল একটি স্থানীয় বেসরকারি হসপিটালে ভর্তি করা হয়, এবং সে ভুল করে প্যারাকোয়াট নামক ভয়ঙ্কর বিষ তথা হারবিসাইড খেয়ে ফেলে, ৪টা মেয়ে তাকে ডিসচার্জ করার পর ১৪ই মে নাগাদ তার খুব শ্বাসকষ্ট হতে থাকে, ওই অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটালে, এবং শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যাওয়ায় তাকে ১৮ই মে ইনকিউরেশনের দেওয়া হয়।, সাথে সাথে তাহার সিটি স্ক্যান করা হয় সিটি স্ক্যান এ ধরা পড়ে ফুসফুস ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়ার পর যখন আরো অবনতি দেখা দেয়, সেই সময় ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য হসপিটালে একটি দেশব্যাপী অনুরোধ করে, অঙ্গের জন্য এবং রোটো পূর্বাঞ্চল খুব দ্রুত এগিয়ে আসে, অঙ্গদানের জন্য তারা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে ২৩ শে জুন মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল রোটো এবং নোটো থেকে জানতে পারে যে ভুবেনশ্বরের সামনে আলটিমেট হসপিটালে ৪১ বছর বয়সি প্রসেনজিৎ মহান্তিকে ব্রেন ডেট করা হয়েছে এবং ফুসফুস দান করার ক্ষেত্রে উপযোগী, সাথে সাথেই মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটালের ফুসফুস প্রতিস্থাপন টিম ২৩ শে জুন পৌঁছে যায় ভুবনেশ্বরে এবং ফুসফুস নিয়ে পরের দিন অর্থাৎ ২৪ শে জুন হসপিটালে ফিরে আসে, ২৫ শে জুন ১৬ বছর বয়সী সব সপনীলের অপারেশন হয়। এবং অপারেশন সাকসেস হয়, এখন সুস্থ স্বাভাবিকভাবে রয়েছেন বলে জানান ডক্টরেরা এবং জানান হয়তো ১০ /১২ দিনের মধ্যে ওকে ছেড়ে দেয়া হবে আশা করা যেতে পারে। ডক্টর কুনাল সরকার বলেন এটা শুধু আমার একার দ্বারাই সম্ভব হতো না আমার সাথে সকল ডক্টর সহপাঠীরা না থাকলে এবং নার্সরা না থাকলে এবং তারা সারা রাত জেগে কাজ না করলে হয়তো কোন কিছুই সম্ভব হয়ে উঠত না তাই এই সাফল্য সবার জন্যই হয়েছে, এর সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেউ কৃতজ্ঞতা জানান এই ধরনের একটি শিশুর পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, আমরা কৃতজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে ডাক্তার বাবুরা যদি আমাদের পাশে না থাকতেন, আমরা যদি সময় মত রোগীকে মেডিকাতে নিয়ে না আসতাম ,হয়তো কিছু একটা ঘটতে পারত, আজ সকলের সহযোগিতায় ও চিকিৎসায় আমাদের রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে, আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের পাশে সরকার ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে, তাই ডাক্তার বাবুরা অসাধ্যকে সফল করে তুলেছেন চিকিৎসার মাধ্যমে, এবং সফল হতে পেরেছেন। এর সাথে সাথে ডাক্তার বাবুরা এই ছোট শিশুদের দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন এবং তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক আর বাড়ি ফিরুক এটাই তারা বারবার সাংবাদিকদের সামনে বললেন, শুধু তাই নয় তিনি সাংবাদিকদের ও বলেন, আপনারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন এবং এই ধরনের রোগকে যদি প্রচার না করেন,তাহলে কেউ জানতে পারবে না, কিভাবে এই শিশুটি প্রাণ ফিরে পেল, আর যদি কারো এই ধরনের কিছু ঘটে থাকে তারা জানতে পারবে না, কিভাবে যোগাযোগ করবেন,। মেডিকা সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল সবার সাথে, সবার পাশে আজও রয়েছে।