শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
ফিরোজ হোসেন,নওগাঁ:
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ৪১নং ঝাড়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানুর বিরুদ্ধে স্কুল ফাঁকির অভিযোগ। এলাকাবাসীর অভিযোগ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে অনিয়ম করেও বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু।বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায়, ২০১৩ সালের ৪ই জুলাই বদলগাছী উপজেলার ঝাড়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু যোগদান করেন । যোগদানের পর থেকেই নিজের খেয়াল খুশি মতো বিদ্যালয় পরিচালনা এবং বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন। প্রধান শিক্ষিকা বগুড়া শহরে নিজের বাড়ী থেকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন। সরেজমিনে, বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউপির ৪১নং ঝাড়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে আসেন নি ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু, ইতি পূর্বে দুই দিন বিদ্যালয়ে গিয়েও প্রধান শিক্ষকা কে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার এবং শিক্ষা অফিসারকে জানানো হলেও এক অদৃশ্য শক্তির বলে বারবার অনিয়ম করে পার পেয়ে যান ঐ প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু।বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বলেন, প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু বিদ্যালয়ে যে দিন আসেন,সেদিন বেলা ১১টার পরে। আর যে দিন আসেন না,একদম পুরো অনুপস্থিত। বারবার বলার পরে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। প্রধান শিক্ষিকার সাথে সহকারী শিক্ষক শরিফ ইকবাল ও দেরীতে আসেন বলে জানা গেছে।প্রধান শিক্ষকার দেরিতে আসা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে বারবার বলার পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।স্থানীয়রা বলেন, ঐ প্রধান শিক্ষিকা এখানে যোগদানের পর থেকেই দেরীতে আসেন। প্রধান শিক্ষিকাকে হাত করে শরিফ ইকবাল নামের শিক্ষকও প্রায় দেরীতে আসেন। কিছুদিন পূর্বে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হঠাৎ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসলেও প্রধান শিক্ষিকা কে বিদ্যালয়ে উপস্থিত পায়নি।স্থানীয়রা আরও বলেন, ঐ প্রধান শিক্ষিকা বদলগাছীর শিক্ষা অফিস, শিক্ষক নেতা, হাত করে ঘটনা ধামাচাপা দেন। ঘটনাস্থলে কোন সংবাদকর্মী গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কান্না আর অসুস্থতার ভান করে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্ঠা করে। এভাবেই ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকেন ঐ প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু।প্রধান শিক্ষিকার পিতার ঠিকানা বদলগাছী উপজেলাতে হওয়ায় তিনি ঐ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা পিতার ঠিকানায় থাকেন না। তিনি বগুড়া শহরে স্বামীকে নিয়ে বসবাস করেন। সেখানেই তিনি বাড়ী এবং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বগুড়া থেকে মাঝে মাঝে স্কুলে আসেন এবং মাঝে মাঝে স্কুলে আসেন না।এ বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বর্তমান মেম্বার বলেন, প্রধান শিক্ষিকা কে বারবার বলার পরেও তিনি যথা সময়ে উপস্থিত হন না। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষিকার দেরীতে আসাতে বিদ্যালয়ের সুনাম এবং লেখাপড়ার মান নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন।স্কুল ফাঁকির ব্যপারে ঝাড়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্কুলে আসেন। না যেতে চাইলে তিনি বলেন আপনি শিক্ষা অফিসারকে জানান।এ ব্যপারে ঝাড়ঘরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ফাতেমা জোহুরা বলেন, প্রধান শিক্ষিকা মাঝে মাঝে স্কুলে আসেন আবার মাঝে মাঝে স্কুলে আসেন না। স্কুলে কেন আসেন না, জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, আমি অফিসে কথা বলেছি।এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, আপনারা নিউজ করেন। আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. আলপনা ইয়াছমিন বলেন, আপনি নওগাঁ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে অবগত করেন, আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।