সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে জেলা শহরসহ কুড়িগ্রাম পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা শহরের পৌর এলাকায় গত ১৭ জুন শুরু হওয়া বিধিনিষেধ এক সপ্তাহ ধরে চলমান থাকলেও সংক্রমণের মাত্রা বেড়েই চলছে। অন্যদিকে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার বেশ কিছু সড়কে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে কোনও কাজে আসছে না তা। ফলে নিয়ন্ত্রিত সড়কেও জনগণের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল বেড়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বিধিনিষেধ আরোপের এক সপ্তাহ পার হলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। বরং সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গত এক সপ্তাহে যে পরিমাণ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে, তা সপ্তাহ বিবেচনায় এ বছরের সর্বোচ্চ। এ অবস্থায় বিধিনিষেধ কার্যকরে প্রশাসনের নজরদারির পাশাপাশি মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই। জেলা শহরের পৌর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, জনসাধারণের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে শহরের কয়েকটি সড়কের প্রবেশপথে বাঁশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধসহ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ বাধা উপেক্ষা করেই সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে চলাচল করছে। নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সড়কে দেওয়া ব্যারিকেডের বাঁশ সরিয়ে চলাচল করছে মানুষ। সেই সঙ্গে বেড়েছে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলে যাতায়াত। আবার পৌর এলাকায় বেশিরভাগ মানুষকে মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হতে দেখা যাচ্ছে। ছোট ছোট যানবাহনগুলোতে কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই চলছে মানুষের যাতায়াত। বাজারগুলোতে ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকার বিপরীতে মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার প্রবণতা চলছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২৪ জুন জেলায় ৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৬ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে সদর উপজেলার ২৩ জন। গত এক সপ্তাহে জেলায় ১৫৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত তিন দিনে জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৮ জনের। যার মধ্যে ৫৪ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা। অথচ জেলা শহরের পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ চলমান। জানতে চাইলে জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ও জেলা করোনা সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধের আওতাধীন এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি জেলার সীমান্ত এলাকার উপজেলাগুলোতেও বিধিনিষেধ আরোপ করা জরুরি। তবে মানুষ নিজে সচেতন না হলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরও জেলায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে সংক্রমণ আরও বেড়েছে। এ অবস্থায় কঠোর বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিধিনিষেধের আওতাধীন এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’