রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
পাবনা প্রতিনিধি :
পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের পাবনা শাখার বিরুদ্ধে করোনাকালীন সময়ে কর্মহীন পরিবারের কাছ থেকে চাপ সৃষ্টি করে ডিপিএসের টাকা আদায় করা ও ডিপিএস ভেঙে টাকা উত্তোলনে গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।
ভ‚ক্তভোগীদের অভিযোগ, পরিবারের কর্তা মারা যাবার পর ১২ বছর মেয়াদী দুইটি ক্ষুদ্র বীমার ডিপিএস অর্ধেকে এসে চালাতে পারছেন না। পরিবার পরিচালনার জন্যেই তারা ডিপিএস দুটি ভেঙে সেই অর্থ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ ও আর্থিক দৈন্যদশা থেকে পরিত্রাণের জন্য পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের পাবনা শাখা সংশ্লিষ্টদের কাছে জানালেও তারা বিষয়টি কর্ণপাত না করে উল্টো পুরো সময়ের জন্যই ডিপিএস টেনে যেতে হবে বলে সাফসাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
পাবনা শহরের পৌর এলাকার গোপালপুর মহল্লার মৃত চুনিলালের পুত্র রাজাবাবু জানান, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সে তার ও তার মা দীপালির নামে ৫০০ টাকা মূল্যের পৃথক ২ টি ক্ষুদ্র বীমা (ডিপিএস) করেন। দুটি ডিপিএস ৫/৬ বছর ধরে কিস্তি জমা করলেও এরই মধ্যে তার বাবা চুনিলালের মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর পরও বেশ কয়েক বছর তারা ডিপিএস’র কিস্তির টাকা জমা দিয়ে এলেও বর্তমানে আর্থিক দৈন্যতার কারণে ডিপিএস চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
রাজাবাবু জানান, চরম অর্থকষ্টের মধ্যে রয়েছি। ডিপিএস’র গচ্ছিত টাকাগুলো পেলে সংসার পরিচালনা ও আর্থিক সংকট থেকে পরিত্রান পেতাম। কিন্তু ১২ বছর পূর্ণ না হলে এই ডিপিএস ভাঙা যাবে না বলে নানা টালবাহানা করছেন পপুলার ইন্সুরেন্স সংশ্লিষ্টরা। এমন কি জোরপূর্বক চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি আদায় করছেন। যা বর্তমানে আমাদের সাথে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে।
পপুলারের পাবনা শাখার সহকারী ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিপিএস করানোর সময়ে তাদের কাছ থেকে ১২ বছরের জন্য চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে নেয়া হয়েছে। মেয়াদ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এটার কোন নিষ্পত্তির নিয়ম নেই।
আর প্রতিষ্ঠানটির পাবনা শাখার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম উজ্জল বলেন, ৫ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছি। ডিপিএস ভেঙে দিয়ে গ্রাহককে টাকা দেয়ার কোন নিয়ম নেই। জরুরী প্রয়োজনে গ্রাহক তার ডিটিএস ভেঙে ফেলতে পারবেন না এমন কোন পরিপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পেপার পত্রিকায় যা ইচ্ছে নিউজ করেন। দেখেন কোন কাজ হয় কিনা। এ বিষয়ে আমাদের কোন করণীয় নেই বলে তিনি দাবী করেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনায় কার্যক্রম পরিচালনা সরকারি বেসরকারি একাধিক ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শর্তপ্রযোজ্য থাকে। সেই শর্ত পূরণ হওয়ার পর গ্রাহক ডিপিএস চালাবেন কি চালাবেন না এটা নিতান্তই গ্রাহকের সিন্ধান্ত। তারা আরও বলেন, গ্রাহক চাইলে প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুসারে ডিপিএস ভেঙে তার টাকা উত্তোলন করে নিতে পারেন। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ডিপিএস ভাঙা যাবে না এমন নিয়মের বিষয়ে তারা বলেন, সরকারি বেসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলো জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।
পাবনা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মির্জা আজাদ বলেন, আমি নিজেও এর ভূক্তভোগী। দুই বছর ডিপিএস টেনে বন্ধ করে দিয়েছি। তারা আমাকে আমার গচ্ছিত টাকা ফেরত দেয়নি। তিনি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।