বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৯ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এম বি রিয়াদ, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মহানবী (সা:) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত রিজভী আহমেদ ওশান আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে নড়াইল জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। অভিযুক্তের বিচার চেয়ে সোমবার প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার বিচার দাবি করেছেন।
তথ্য মতে, সম্প্রতি চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আযানের ঘটনায় দুজন মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বিষয়ে মহানবী (সা:) কে জড়িয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয় ওশান। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দুদের তীর্থস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়। সেখানে গিয়ে ‘এখানে একদিন ইসলামের পতাকা উড়াবো’ বলা যদি অপরাধ না হয়ে থাকে তাহলে মহানবী কে কটূক্তি করাও কোন অপরাধের পর্যায়ে ফেলানো যায় না। তার এ পোস্টে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা:) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় সে ইসলাম সম্পর্কে কটূক্তিমূলক পোস্ট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তার বিচার চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রিজভী আহমেদ ওশান বলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দুদের তীর্থস্থান হিসাবে বিবেচিত হয় এবং সেখানে গিয়ে ‘এখানে একদিন ইসলামের পতাকা উড়াবো’ বলা যদি অপরাধ না হয়ে থাকে তাহলে মহানবীকে ‘কটুক্তি’ করাও কোন অপরাধের পর্যায়ে ফেলানো যায় না। রাসুলের নামে উল্টাপাল্টা বলা বা মক্কা-মদিনায় গিয়ে নরেন্দ্র মোদি যদি বলে হিন্দুত্ববাদ কায়েম করবো, এগুলোতেও অনূভুতিতে আঘাত লাগবে মুসলমানদের। এনালজি এটাই ছিলো। এলাবোরেট করিনি, কারণ আমার টার্গেট অডিয়েন্স যারা, তারা এতটুকুতেই বুঝবে। কিন্তু আমার প্রতি যাদের ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা আছে তারা অপপ্রচার করে ধর্মকে ব্যবহার করে আমার বহিষ্কার চাইছে। এটা পলিটিকালি আমাকে হেয় করার জন্য। সবখানে ইসলাম প্রচারের ইনডেমনিটি চাইলে ইসলামের সমালোচনাটাও মেনে নিতে হবে।
এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ নেতা রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে এই ছেলেকে না চিনলেও অনেক আগে থেকেই এর বিরুদ্ধে মারধর/হুমকি দেয়া সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের অভিযোগ শুনেছিলাম। পরে জানতে পারি সে ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে কটাক্ষ করে। সম্প্রতি মহানবী (সাঃ) কে নিয়ে জড়িয়ে দেয়া স্ট্যাটাস অত্যন্ত আপত্তিকর। তার বিরুদ্ধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
শাখা ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে যারা ধর্মীয় কটুক্তি করবে তাদের আমরা সমর্থন করিনা। এ ঘটনায় জড়িত ওশানের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
শাখা ছাত্রলীগ নেতা নুর আলম বলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যে ঘটনা ঘটেছে সেটাও যেমন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সামিল। তদ্রুপ ওশান সেই ইস্যুটির সাথে আমাদের প্রিয় নবি সাঃ কে যে বিদ্রুপ করেছে সেটাও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সামিল। বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছি। বঙ্গবন্ধুর ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। সব ধর্মের সমান সুযোগ ই হলো ধর্মনিরপেক্ষতা
ইবি ছাত্রলীগের সাবেক উপ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক যুবায়ের রহমান বলেন, বিশ্ব নবীর বিরুদ্ধে কটূক্তি করা মানে ইসলাম ধর্ম কে অবমাননা করা। সকলে সকলের ধর্ম পালন করবে কেউ কারোর ধর্মের প্রতি হস্তক্ষেপ করবে না। আমি ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি। এবং প্রশাসনের কাছে বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছি।
ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, ছাত্রলীগের গঠণতন্ত্রে এমন কোন কথা নেই যা ধর্মবিদ্বেষী। কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ধারণ করে সংগঠনকে ধর্মবিদ্বেষী প্রমাণের চেষ্টা করে তাহলে তার উচিৎ গঠণতন্ত্র ভালোভাবে পড়া। কোন ধর্মের বিষয়ে কটূক্তি করা ছাত্রলীগ সমর্থন করেনা। কেউ তা করলে তার শাস্তি হওয়া উচিৎ।
এবিষয়ে ভিসি স্যারের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।