শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২১ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ জহুরুল ইসলাম,কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়ায় এসপি খাইরুল আলমের নেতৃত্বে প্রেমিকাকে সারপ্রাইজ দেয়ার কথা বলে চোখ বেঁধে ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত আসামী আপন কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার কুরিপোল গ্রামের মিলন মিস্ত্রীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার ৪ নং ওয়ার্ড ওয়াবদা রোডের বাসিন্দা খন্দকার মোঃ সাইফুল ইসলাম; মিরপুর থানায় তার মেয়ে উম্মে ফাতেমা (১৪), গত ১৪ জুলাই রাত ১ টায় নিখোঁজ হয়েছে, এই মর্মে একটি জিডি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশ তদন্ত শুরু করলে ১৪ জুলাই বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে মিরপুর পৌরসভা এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের সোলাবিলের জনৈক বিমল এর পতিত জমিতে অজ্ঞাত একটি মেয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে ১৫ জুলাই এই সংক্রান্তে একটি ক্লুলেস হত্যা মামলা রুজু করা হয়; যার মামলা নং ৯, এরই ধারাবাহিতায় একই দিন মিরপুর থানার একটি চৌকশ দল পরিকল্পিত অভিযান চালিয়ে কুরিপোল এলাকা থেকে আপনকে আটক করে।
এসপি খাইরুল আলম আরো জানান, আটক আপনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় উম্মে ফাতেমার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই মধ্যে আপনের সাথে অন্য একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়।ফাতেমা আপনকে বার বার বিয়ের জন্য অনুরোধ করে চাপ প্রয়োগ করলে আপন বিষয়টি ভিন্নভাবে চিন্তা করে এবং সাত দিন পূর্বে আপন ফাতেমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩ জুলাই রাত ৮ টায় আপন ফাতেমাকে ফোন করে বিয়ের জন্য আশ্বস্ত করে বলে ঐ রাতেই ফাতেমাকে বিয়ে করে নিয়ে যাবে।কথামত ১৩ জুলাই দিবাগত রাত ২ টার দিকে ফাতেমাকে ফোনকরে বাইরে এনে কামালের ইটভাটায় নিয়ে যায়। এ সময় ইটভটার নাইটগার্ড টর্চ লাইট মারতেছে দেখে আপন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মিরপুর পৌর এলাকার সোলাবিলের মাঠে জনৈক বিমলের পতিত জমিতে নিজের সাইকেলে করে নিয়ে আসে। একটু পরেই মাইক্রোবাস আসবে এই কথা বলে ফাতেমার সাথে আপন একান্তে সময় কাটায়। এ সময় ফাতেমা আপনকে জড়িয়ে ধরে বলে আপন যেন ফাতেমাকে ছেড়ে না যায়। তখন আপন ফাতেমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য চোখ বাঁধতে বলে। ফাতেমা সরল বিশ্বাসে তার ওড়না দিয়ে চোখ বাঁধতে দেয়। আপন ফাতেমার চোখ বাঁধার পর পকেট থেকে ছুরি বের করে ফাতেমার গলা,পিঠ,পেট ও মুখমণ্ডলের নানান যায়গায় উপর্যুপরি কোপ দিতে থাকলে ফাতেমা ডাক-চিৎকার দিতে থাকলে আপন তার গামছা দিয়ে ফাতেমার মুখ চেপে ধরে মাটিতে শোয়াইয়া নাইলনের রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপরে সে ওখান থেকে ওড়না, রশি ও চাকু নিয়ে চলে আসে।পরে পুলিশ আপনের বসতবাড়ীর পশ্চিম পাশে জনৈক আশরাফের বাঁশ বাগান থেকে ধারারো চাকু ও আপনের বসতবাড়ী থেকে রশি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কুষ্টিয়া জেলা পু্লিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল ও আসামী আপনের বসতবাড়ী পরিদর্শন করেন এবং মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ও ফোর্সদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার খাইরুল আলম আরো জানান, আপনকে আটক করে আদালতে প্রেরন করলে সে ঘটনা সংক্রান্তে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে আদালত আপনকে জেল হাজতে প্রেরন করে।