admin
- ৭ মার্চ, ২০২৩ / ১০৮ Time View
Reading Time: 2 minutes
হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা :
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের একটি সাব-প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র থাকলেও তা কোনো কাজে লাগছে জনসাধারণের। উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র (কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট)এর বেহালদশা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই কয়েক বছর থেকে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই সাব-প্রাণীসম্পদ অফিসের বেহাল দশা থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ইউনিয়নের শতশত হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর খামারীরা। জরাজীর্ণ অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় উপকরণ, ঔষধ ও জনবল সংকটের কারণেই কয়েক বছর ধরেই নিমজ্জিত হয়ে পড়ে আছে। সরকারি এই প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রটি। উপজেলায় বামনডাঙ্গা ইউনিয়নেই তালিকাভুক্ত গরুর খামার রয়েছে ৬০ টিরও বেশি। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আরও ছোট-বড় প্রায় ১৫০ টি বেশি খামারসহ রয়েছে হাঁস-মুরগি, ছাগল ও ভেড়ার খামার। তবে গবাদিপশুর সংখ্যা এই ইউনিয়নে প্রায় ৪ হাজারের বেশি হবে বলে জানা গেছে। বর্তমান সরকার যখন দেশকে দারিদ্র মুক্ত করতে বিভিন্ন উপায়ে যেমন, ছাগল পালন, হাঁস- মুরগীর খামার, গবাদী পশু পালনে মানুষদের আগ্রহী করছেন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে সরকারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অসচেতনা ও অবহেলায় যেমন আগ্রহ হারাতে বসেছে পশু পালনকারীরা, তেমনি নষ্ট হচ্ছে এই সাব-প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের জরাজীর্ণ ভবন ও সরঞ্জামাদি। কারণ প্রয়োজনীয় জনবল ও দেখভালের অভাবে এই প্রাণীসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম না থাকায় ভুতুরে বাড়ীতে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মধ্যে ১টি সাব প্রাণীসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র আছে। এখানে এক সময় প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন বিভিন্ন সেবা যেমন কৃত্তিম প্রজনন, ছাগলের ঠান্ডা কাশিসহ ভ্যাক্সিন নিতে আসতেন খামারিরা। এখন এটির ব্যবহার না থাকায় গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে খামারিদের। সরকারী সেবার এই দৈন্য দশার সুযোগে পশু ডাক্তারের নামে হাতুড়ে ডাক্তারের ছড়াছড়ি হয়ে পড়েছে। আর এদের হাতে গলাকাটা সেবার শিকার হচ্ছে সাধারণ খামারিরা। খামারি শাহজাহান মিয়া বলেন, আগে এই কেন্দ্র থেকে খামারের গবাদিপশুদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন পরামর্শ নিতাম কিন্তু বিগত কয়েক বছর থেকে এটি বন্ধ থাকায় সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত আছি। বিভিন্ন হাতুরী ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। তাই কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করলে আমরা সরকারি সেবা ফিরে পাবো। বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সেবাদানকারী (এলএসপি) শরিফুল ইসলাম লিটন জানান, এই কেন্দ্রে এক সময় খামারিদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেত কর্তব্যরত কর্মকর্তাগণ, কিন্তু কয়েক বছর ধরে এটার বেহাল দশা। এখন সেবা কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্বে কেউ নেই, নেই সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরাঞ্চামাদি। যার ফলে সাধারণ মানুষ ছুটে চলছে হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে এবং হরহামেশা প্রতারিত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ফজলুল করিম জানান, উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের এই সাব-প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রটি ঐ এলাকার অধিকাংশ মানুষের পশু পাখির চিকিৎসার এক মাত্র ভরসা ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এটি সেবা কার্যক্রম বন্ধ। কেন্দ্রটি বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় এখন খামারিরা এখানে আসতে চায় না। তিনি আরো জানান, এটা জেলা পরিষদের জায়গায় অবস্থিত। ভবনটি যদি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভিতর থেকে ভেঙ্গে অন্য কোথাও নির্মাণ করা সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ একটু সুদৃষ্টি দেয় তাহলে কেন্দ্রটি পুনরায় চালু রাখা সম্ভব।