বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম, গাইবান্ধা
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চরম বিপাকে পড়েছে জনগণ।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ কখনো দিনে ১৫-২০ বার, কখনো ১০ মিনিটে তিনবার, আবার কখনো ঘন্টায় নয়বার লোডশেডিং চরম বিপাকে পড়েছে জনগণ।
এ উপজেলায় শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, কোনো ঋতুতেই বন্ধ হচ্ছে না লোডশেডিং।
বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে।
দীর্ঘদিন পুর্বে এ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মরহুম মনজুরুল ইসলাম লিটন (এমপি) পার্লামেন্টে বিদ্যুৎ প্রতি মন্ত্রীর নিকট দাবি তুলে ধরে জানিয়েছিলেন, এ উপজেলার জনগণ মাত্র ৪৫ ভাগ বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়েছে তাও ঘনঘন লোডশেডিং।
পরবর্তীতে আবারও জাতীয় সংসদ সদস্য মরহুম গোলাম মোস্তফা আহমেদ (এমপি) পার্লামেন্টে তিস্তা বাজেটের সময়, সুন্দরগঞ্জের বিদ্যুৎ নিয়ে ৫ মিনিট বক্তব্যে বলেছিলেন দেশের অন্য অন্য এলাকায় ৮০% বিদ্যুৎ বাস্তবায়ন করা হলেও আমার নির্বাচনী এলাকায় মাত্র ৬০% মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়েছে, তাও আবার ঘনঘন লোডশেডিং। এরআগেও স্থানীয় সাংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী (এমপি) বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিং রোধে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে গণশুনানি করেও কোন প্রতিকার হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে ফ্রিজ, টিভি, ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এছাড়া শিশু-বয়োবৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও মেলেনি কোন সুরাহা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং বেড়েই চলেছে।
পৌর শহরে কিছুটা কম হলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে লোডশেডিং।
কখনো কখনো একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে ৪-৫ ঘণ্টার আগে দেখা মেলেনা বিদ্যুতের।
কঙ্কন সরকার নামের একজন সাহিত্যিক পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেসবুকে লিখেছেন, সুন্দরগঞ্জের কারেন্টওয়ালারা দয়া করে এভাবে আর বিজলীবাতির মত লোডশেডিং এ ফেলবেন না।
সারাদিনে যে কতবার এলো গেলো! যদি লোডশেডিং দিতে হয় নির্দিষ্ট সময় দিয়ে তারপর কারেন্ট সাপ্লাই করুন।
আমাদের ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্রের মূল্য আছে। কারেন্টের এভাবে ফুরুৎ ফুরুৎ আসা যাওয়াতে নষ্ট হলে আপনারা কি ক্ষতিপূরণ দিবেন।
ধুমাইটারী চাঁন্দের মোড়ের ব্যবসায়ী রিপন সরকার বলেন, খুবই বিরক্তিতে আছি।
বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে কোন কাজ ঠিক মতো করতে পারছিনা। কম্পিউটার চালু করতে ৩-৪ মিনিট লাগে। কখনো কখনো কম্পিউটার চালুর আগেই বিদ্যুৎ চলে যায়।
এরইমধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার কয়েকবার নষ্ট হয়েছে। ব্যবসায় অনেকটা ক্ষতি হচ্ছে।
ঝিনিয়া গ্রামের মশিউর রহমান বলেন, আগে এত লোডশেডিং হতো না। এখন সারাদিন কাজ করার পর রাতে ঘুমাতে গেলেই দেখি বিদ্যুৎ নেই।
অসহ্য গরমে ঘুমানো যায় না, ঘন ঘন লোডশেডিং যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
পিন্টু সরকার নামের একজন বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা সুন্দরগঞ্জ। কিন্তু প্রতিদিন নানান কাজের কথা বলে ৮/১০ ঘন্টা লোডশেডিং দিচ্ছেন, যা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল।
যা রংপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ সুন্দরগঞ্জ জোনাল অফিস কর্তৃক পরিচালিত।
এই অফিসের বড় কর্তা মিলন কুমার কুণ্ডু এতোটাই প্রভাবশালী সবকিছুকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো বিদ্যুৎ অফিস পরিচালনা করে আসছেন।
বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগও তিনি নিজের পকেটে ভরে রাখেন।
রংপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সুন্দরগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মিলন কুমার কুণ্ডু বলেন, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করার যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে।
দিনের বেলা অনেক সময় বৈদ্যুতিক লাইনে সমস্যা থাকায় লোডশেডিং হয়। আর রাতে বিদ্যুৎ সাপ্লাই কম হওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।