রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আ’লীগের সাবেক সভাপতিসহ গ্রেফতার ৯ নওগাঁর ১নং ভাঁরশো ইউনিয়নে কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত ১ আসামি গ্রেফতার রাজশাহীতে ফের বাস ও সিএনজি চালকের সংঘর্ষ আহত ২ রাজশাহীর পুঠিয়ায় ইটের মাপ কমিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ পাবনায় বালুবাহি ট্রলি চাঁপায় পুলিশ সদস্য নিহত ১জন আহত আটক ২জন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার সমিতি’র নতুন কমিটি গঠন রাজশাহীতে ভরা মৌসুমে সারের তীব্র সংকট! আলু বীজ রোপণ করতে পারছেন না চাষিরা! দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকা’র সাংবাদিক না ফেরার দেশে চলে গেলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা চেক বিতরণ ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান

ময়মনসিংহে ইস্টার সানডে পালিত

Reading Time: 2 minutes

কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
আজ রবিবার (১৭ এপ্রিল), পবিত্র ইস্টার সানডে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে। ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দে স্থাপিত, ৪৫ কে.সি.রায় রোডস্থ, ময়মনসিংহ ব্যাপ্টিষ্ট গীর্জায় সকাল ৬:০০ টায় উপাসনা শুরু হয়ে সকাল ৮:০০ টায় উপাসনা শেষ হয়। দুই শতাধিক খ্রীষ্টিয় ভক্তগণ উপাসনায় উপস্থিত ছিলেন। উপাসনায় যীশুখ্রীষ্টের পূনরুত্থান বিষয়ের উপর পূর্বের নির্ধারিত বক্তা ব্যাপ্টিষ্ট মন্ডলীর সম্পাদক বিশদ আলোচনা করেন। উপাসনার মধ্যে খ্রীষ্টিয় গান ও প্রার্থনা করা হয়।
খ্রীষ্টিয় বিশ্বাস মতে, যীশু মানবজাতির পাপের জন্য নিজে শাস্তিভোগ করেছিলেন। যাতে যীশুতে বিশ্বাসীর মৃত্যুর পর চিরকালের জন্য স্রষ্টার কাছ থেকে আলাদা হয়ে না যায় সেজন্য যীশু ক্রুশে বলি হলেন। যাতে বিশ্বাসীরা অনন্তজীবন লাভ করতে পারে। যীশু বলেছিলেন, ‘‘কেহ আমা হইতে তাহা হরণ করে না, বরং আমি আপনা হইতেই তাহা সমর্পণ করি। তাহা সমর্পণ করিতে আমার ক্ষমতা আছে; এবং পুনরায় তাহা গ্রহণ করিতেও আমার ক্ষমতা আছে; এই আদেশ আমি আপন পিতা হইতে পাইয়াছি। যোহন ১০: ১৮ পদ।
যীশু বোঝাতে চেয়েছেন তিনি স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিতভাবে মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের প্রাণ নিজে উৎসর্গ করতে পারেন এবং তারপর নিজের ক্ষমতার মাধ্যমে নিজে পুনরায় সেই প্রাণ গ্রহণও করতে পারেন।
যীশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান অপ্রত্যাশিত ছিল না। যীশু বহুবার নিজের মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তবে একথা ঠিক অনেক মানুষ তখন তার পুনরুত্থানের বিষয় বুঝে উঠতে পারেননি। প্রভু যীশুর জন্ম মৃত্যু পুনরুত্থান কোনোটিই অপ্রত্যাশিত নয়। তিনি বেথলেহেমে কুমারীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করবেন সেকথা খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় সাতশত বছর আগে যিশাইয় নবীর মধ্যদিয়ে প্রকাশিত হয়েছে।
আলোচনায় সম্পাদক বলেন, খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী অর্থ্যাৎ আমাদের মতে, “আজকের এই দিন খ্রীষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রীষ্ট মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান করেছিলেন। গুড ফ্রাইডে’তে ইহুদীরা তাঁকে অন্যায়ভাবে ক্রশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল। মৃত্যুর তৃতীয় দিন অর্থাৎ রবিবার দিন তিনি মৃত্যু থেকে পূনরুত্থিত হয়ে উঠেছিলেন। মৃত্যুকে জয় করে যীশু আবারও মানুষের মাঝে ফিরে আসেন।” এই পুনরুত্থান খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী হিসেবে ও বিশ্বাসী হিসেবে আমাদের জন্য খুবই আনন্দের এবং খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি বলেন, এটি খ্রীষ্টিয়ানদের মৌলিক বিশ্বাস যা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের মূল ভিত্তি। তাই আমাদেরও উচিত “যীশুর মত মানব কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে সঠিক সত্য প্রতিষ্ঠিত করে বৈষম্যহীন, সহানুভুতিশীল, গঠনমূলক একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া। ইস্টার সানডে বা যীশুর পূনরুত্থান দিবসে এই হোক আমাদের মর্ম বাণী।
আজকের পুনরুত্থানের বিশ্বাসে সর্বাধিক বিস্তৃত বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করেন খ্রীষ্টিয়ানরা। পূনরুত্থান শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো পুনরায় উত্থিত হওয়া বা উঠা। পুনরুত্থানের সমার্থক অর্থ হলো জেগে উঠা, সজীব হওয়া, পরিবর্তন হওয়া, রূপান্তরিত হওয়া, নতুনভাবে শুরু করা, পুনরায় আরম্ভ করা। ইস্টার সানডে অর্থাৎ পূনরুত্থান খ্রীষ্টিয় ধর্মীয় বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ইস্টার সানডে উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বেই খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীরা উপবাস সহ বিশেষ প্রার্থনা সভা ও ইস্টারের গীর্জায় উপাসনার আয়োজন করা হয়।
করোনার প্রভাবে ২০২০ খ্রীষ্টাব্দ ও ২০২১ খ্রীষ্টাব্দে লকডাউনের মধ্যে গুড ফ্রাইডের প্রার্থনা হয় অনলাইনে। বাড়ি থেকেই প্রার্থনার আহ্ববান জানানো হয় গীর্জার কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে। অনলাইনে লাইভ স্ট্রিমিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়।
২০২২ খ্রীষ্টাব্দে লকডাউন না থাকায় অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার প্রতিটি গীর্জায় উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ইস্টার সানডে উদযাপিত হয়। নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে থেকে বিভিন্ন উপাসনালয়গুলোতে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও টাঙ্গাইল জেলার গ্রামাঞ্চলের গীর্জাগুলোতেও ইস্টার সানডে পালিত হয়েছে। সকলেই নতুন পোশাক পরিধান করে পরিপাটি হয়ে গীজায় আসে ও মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com