admin
- ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ / ৯৯ Time View
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নতুন করে অসুস্থ হয়ে বারিন্দ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সুমাইয়া নামের এক শিক্ষার্থী।ওই শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উর্দু বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী।
উক্ত শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) অনশন থেকে অসুস্থ হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তার পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাকে মেসে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এর আগে অনশন থেকে উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনিজা আক্তার মনি, সুরাইয়া আক্তার মীম, রুমানা, চামেলী, নুসরাত প্রিয়া, ফারজানা লুনা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের মধ্যে নুসরাত প্রিয়া এবং ফারজানা লুনার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রাতেই বারিন্দ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ নিয়ে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আতাউর রহমান বলেন, যে দুইজন ছাত্রী ভর্তি ছিল তার মধ্যে লুনা মেয়েটার অবস্থা একটু খারাপ। সে একটু পরপর বমি করছে এবং সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছে। তাকে নেবুলাইজারের মাধ্যমে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে এখন। আর প্রিয়ার অবস্থা একটু ভালো তবে শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল। সুমাইয়া মেয়েটা আজকে দুপুরে ভর্তি হয়েছে। তারও শরীর দুর্বল। প্রোপার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সার্বক্ষণিক তাদের মনিটর করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, বিষয়টা আমাদের তত্ত্বাবধানে আছে সবসময়। আমরা সবসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারদের সাথে কথা বলছি। ওদের ভালো চিকিৎসার জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ মনোযোগী এবং যেখানে যা করা লাগবে তাই করবে এবং করছে।
এর আগে গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ফল বিপর্যয়ের প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। অনশন চলাকালে দফায় দফায় উর্দু বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে এলেও শিক্ষার্থীরা ওঠেননি। এ সময় বিকেলে ও সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের কথা-কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডাও হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূর, জনসংযোগ দপ্তরের কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, প্রক্টরিয়াল বডিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।
এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে একটি প্রতিনিধি দল সন্ধ্যা ৭টার পর উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার সহ, উপ-উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদনের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ যেন আর না হয়, সেদিকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় চার মাস ধরে উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। তাদের অভিযোগ, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তাদের ফলাফল বিপর্যয় ঘটানো হয়েছে। এ জন্য তারা বিভাগের কিছু শিক্ষককে দায়ী করেন।