সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাব্বানী:
রাজশাহীর চারঘাটের একমাত্র সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ সরদহ সরকারী মহাবিদ্যালয় শিক্ষক সংকটে জোড়াতালি দিয়ে চলছে কলেজের নিয়মিত শিক্ষাদান কর্মসূচী।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ঘাটতি পুষিয়ে নিতে কলেজের শিক্ষাদান পুরোদমে শুরু হলেও শুধু শিক্ষক সংকটের কারনে ব্যহত হচ্ছে প্রতিদিনের পাঠদান।
কলেজ জাতীয় করন পরবর্তী কাজ ও শিক্ষক নিয়োগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলে জানিয়েছেন ইউএনও ও সরদহ সরকারী কলেজের সভাপতি সৈয়দা সামিরা।
উপজেলার প্রাচীনতম এই কলেজটি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই কলেজটি প্রথমত এইচএসসি এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে স্নাতক (পাশ) এবং স্নাতক (সম্মান) পাঠদান চালু রয়েছে।
মোট ২৫টি বিষয় বাংলা, ইংরেজী, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গনিত, পরিসংখ্যান, মনোবিজ্ঞান, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, ফিন্যান্স, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, ইসলাম শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, দর্শন ও ভূগল এ প্রায় এক হাজার ছয়শত শিক্ষার্থী পাঠদান নিচ্ছেন। কলেজটি ২০১৬ সালে জাতীয়করনের ঘোষনা হলেও ২০১৮ সালে ৮ই
আগষ্ট জাতীয়করন হয়।
বাংলা বিষয়ের প্রভাষক রেজা বলেন, কলেজটি জাতীয়করন হলেও আজ পর্যন্ত কলেজের শিক্ষক জাতীয়করনের আওতায় আসে নি। শিক্ষকরা জাতীয়করনের কোন সুফল বা সুযোগ সুবিধা পায়নি।
নাম প্রকাশে একাধিক কলেজ শিক্ষক এজন্য অদক্ষ কলেজ প্রশাসন ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই এর সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ৫টি বিষয় ইংরেজী, অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান, দর্শন, আইসিটি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের কোন শিক্ষক নেই।
আরও ৮টি বিয়য়ে রয়েছে একজন করে শিক্ষক। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংকট কাটাতে শিক্ষক পূরনের কোন উদ্যেগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা নিয়ে রীতিমতো উৎকন্ঠায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
জাতীয়করনের পরে বিগত সাত বছরে এ কলেজ থেকে একে একে একাধিক শিক্ষক অবসরে চলে যান। অবসরে যাওয়া অন্যতম শিক্ষকগনরা হলেন, প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, গনিতের নজরুল ইসলাম, মনোবিজ্ঞানের মাজদার রহমান, বাংলার মোবারক হোসেন, জীববিজ্ঞানের সালেহা খাতুন, মার্কেটিং এর আলতাব হোসেন অন্যতম।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইংরেজী,বাংলাসহ কয়েকটি বিষয়ে কোন শিক্ষক না থাকায় খন্ডকালীন শিক্ষক ও অনার্স এর শিক্ষক দিয়ে চলছে এইচ.এস.সির ১ম, ২য়, স্নাতক (পাশ) ১ম,২য় ও ৩য় বর্ষের শিক্ষা পাঠদান করাচ্ছেন। অবসরজনিত কারনে এবং নতুন শিক্ষক না নেয়ায় কলেজটিতে ইংরেজী, বাংলাসহ কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষক শুন্য হয়ে পড়ে। শিক্ষকশুন্য এসকল বিষয়ে কোন শিক্ষক না থাকায় পাঠদান সচল রাখতে নিয়মবহির্ভুতভাবে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী।
এপ্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এজাজুল হক ভোরের কাগজকে জানান, কলেজটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ জন শিক্ষকের পদ শুণ্য রয়েছে। জাতীয়করন হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে না। ইংরেজীসহ কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় খন্ডকালীন খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে কোন রকম চালাচ্ছেন ওই সকল বিষয়ের পাঠদান কর্মসূচী।
সরদহ সরকারী কলেজের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট শিক্ষকের চাহিদা চেয়ে পত্র দেয়া হয়েছে তবে অতি শীঘ্রই নতুন শিক্ষক পাওয়া যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।