বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
সরকার ঘোষিত ‘লকডাউনের’ পঞ্চম দিনেও রাজশাহীতে শপিং কমপ্লেক্স, মার্কেট, বিপণিবিতাণসহ সব ধরনের দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি অফিস-আাদালতও রয়েছে বন্ধ। কেবল কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ‘লকডাউনের’ পঞ্চম দিন। তবে দিন যতই গড়াচ্ছে ‘লকডাউন’ অমান্য করার প্রবণতা ততই বাড়ছে।
তবে পাড়া মহল্লায় ও সড়কে বিধি-নিষেধ অমান্য করে অবাধে চলাফেরা করছে মানুষ। পাড়া মহল্লায় রিতি মতো চায়ের চোকানে চলছে আড্ডাবাজি ও চলফেরা। এছাড়াও সড়কে বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষ বিধি-নিষিধ ভেঙে বাড়ি থেকে বাইরে বের হচ্ছেন। স্টিকার লাগিয়ে প্রাইভেটকার ও ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা গুনছেন। এরপরও পুলিশ দেখলে মাস্কও থাকছে মুখে। আর অন্য সময় মাস্ক ঝুলিয়ে রাখছে কানে। সড়কে মানুষের উপস্থিতি বাড়ায় পাড়া-মহল্লার গলিপথে আবারও চলছে অটোরিকশা। এছাড়া লকডাউনের ছোয়া লাগেনি রামেক হাসপাতালের সামনে ব্যস্তত্তম সড়কে। সেখানে রাস্তার প্রায় অর্ধেক অংশ দখল করে ভাতের হোটেল, চায়ের দোকান, ফলের দোকান, প্লাষ্টিক সামগ্রীর দোকানসহ প্রায় ২০টি দোকান বসিয়ে ব্যবসা চলছে ২৪ ঘন্টা। বিধি-নিষেধের বালাই নেই সেখানে। নিজের দোকানে কাস্টমার বাড়াতে বাইরে থেকে হাসপাতালে আসা লোকজনদের টানাটানিও করতে দেখা যায় ভাতের হোটেলের লোকজনকে।
অথচ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এখনও থামছে না মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ইউনিটে আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীরই রয়েছেন ৭ জন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কাউছার হামিদ জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আরও কঠোর অবস্থানে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভ্রাম্যামাণ আদালত। রাজশাহীতে ‘লকডাউনের’ তৃতীয় দিন গত রোববার স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ সময়ে জরিমানা করা হয়েছে ৫১ হাজার ১৫০ টাকা। আর জেলার উপজেলাগুলোতে ৪০টি মামলায় ২৭ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় একজনকে কারাদ-ও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরিমানা করা হয়েছে চারঘাট উপজেলায়। এ উপজেলায় মোট সাতটি মামলায় ১৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আবু আসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীতে ২৩ জুলাই থেকে ‘লকডাউন’ কার্যকর করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের চারটি ও নয়টি উপজেলায় ১৮টি ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করছে। এছাড়া সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের টহল দল কাজ করছে। মহানগরের প্রবেশপথগুলোতেও রয়েছে বাড়তি নজরদারি।
তিনি আরও বলেন, নির্দেশনা অমান্য করে কেউ জরুরি কারণ ছাড়া সড়কে বের হলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া যাদের সামর্থ নেই তাদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। বাড়িতে খাবার না থাকলে কেউ জাতীয় তথ্য সেবা ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন দিলে তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রমও পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।